আল্লাহর নতুন নবী-রাসুল এবং নতুন ওহী ও কেতাব?
এই প্রশ্নের জবাব আমরা জানি না। ইন্টারনেটে (www.newmessage.org ) এই ওয়েবসাইট পেলাম যেখানে এক আমেরিকান নাগরিক যার নাম Marshall Vian Summers দাবী করছেন যে, সে একজন নবী এবং রাসুল। হজরত মুহাম্মদ সঃ এর পরে তিনিই এই আধুনিক যুগের জন্য মহান আল্লাহ তাকে রাসুল হিসাবে পাঠিয়েছেন এবং তাকে অনেক বড় কিতাব দিয়েছেন (প্রায় ১০০০০ পৃস্টার কিতাব) যা ইতিপুর্বে কোন নবী বা রাসুলকে দেওয়া হয়নি।
কারন আধুনিক মানুষ হরেক রকম সমস্যার সন্মুখিন হচ্ছে যা পূর্বের জামানায় ছিল না। তার কেতাব ইংরেজিতে ওহী হিসাবে এসেছে কারন বর্তমান বিশ্বে ইংরেজিই হোল আন্ত্রর্জাতিক ভাষা। সত্য না মিথ্যা তা জাচাই আপনিই করবেন, আমরা এখানে জাস্ট অবহিতির জন্য উক্ত ওয়েবসাইট এর কিছু লিংক দিয়ে দিলাম। তবে তার দাবী এবং তার কথিত ওহী এবং কিতাব কিছু কিছু বিষয়ের ব্যাখ্যা দেয় যা কুরআন বা বাইবেল থেকে স্পস্টভাবে পাওয়া যায় না।
যেমনঃ ১। মহান আল্লাহ অতি দয়ালু ও মেহেরবান ও ক্ষমাশীল তাতে কারো কোন সন্দেহ নেই তাহলে তিনি কাফের-মুশরিকদেরকে অনন্তকাল ধরে জাহান্নামের আগুনে পোড়াবেন কেন? কাফের-মুশরিকরা তো পাপ করেছে এই পৃথিবীতে তাদের ক্ষনস্থায়ী জীবনকাল ধরে মাত্র যা অনন্তকালের তুলনায় কিছুই না। অনন্তকাল মানে হোল যার কোন শেষই নেই। হাজার বছর, লক্ষ বছর, কোটি বছর, হাজার কোটি বছর, লক্ষ কোটি বছর ইত্যাদিরও একটা শেষ আছে কিন্তু অনন্তকালের কোন শেষই নেই।
যে কোন মানুষের আয়ুকাল অনন্তকালের তুলনায় গানিতিকভাবে আসলে শূন্য মাত্র। তাহলে অতি দয়ালু ও মেহেরবান ও ক্ষমাশীল মহান আল্লাহ কি করে কাফের-মুশরিকদেরকে অনন্তকাল ধরে জাহান্নামের আগুনে পোড়াতে পারেন? এটা কেমন ন্যায়বিচার হোল যেখানে মহান আল্লাহ হলেন সবচেয়ে ন্যায়বিচারক?
২। মহান আল্লাহ যদি অতি দয়ালু, ন্যায়বিচারক, মেহেরবান ও ক্ষমাশীল এবং সবকিছু করার ক্ষমতা রাখেন (সর্বশক্তিমান) তাহলে এই পৃথিবীতে এত মহামারী, সাইক্লোন, বন্যা, টর্নেডো, হারিকেন, সুনামী, ভয়াবহ ভুমিকম্প, রোগ-বালাই, ইত্যাদি কেন? ওগুলো দূর করেন না কেন? আমরা জানি আল্লাহ “হয়” বললেই সব হয়ে যায়, আল্লাহর তো আমাদের মত কস্ট করে কাজও করা লাগে না।
অনেক হয়ত বলবে আল্লাহ ওসব ভোগান্তি, আজাব, গজব, কস্ট ইত্যাদি দিয়ে আমাদের পরীক্ষা করেন! কিন্তু মহান আল্লাহ অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত, গোপন ও প্রকাশ্য সবই জানেন কাজেই তাঁর কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই। আমরা মানুষ ভবিষ্যত জানি না, গোপন (গায়েব) বিষয় জানি না, অন্য মানুষের মনে কি আছে তা জানি না তাই আমাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার হয়।
৩। পবিত্র কুরআনে অনেক জায়গাতে আল্লাহ “আমি” এর স্থলে “আমরা” বলেছেন যা বিভিন্ন তাফসিরকারকরা বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেস্টা করেছেন। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা গেছে সব ব্যাখ্যায় আসলে গোজামিলের! নতুন ওহী বলে যা দাবী করা হচ্ছে তা উপরের প্রত্যেকটি প্রশ্নের সন্তোষজনক এবং যৌক্তিক জবাব দিতে পারে।
উপরে উল্লেখিত তিনটি প্রশ্নই না, আরো অনেক গভীর প্রশ্ন আছে যা পবিত্র কুরআন বা বাইবেল থেকে সন্তোষজনক এবং যৌক্তিক জবাব পাওয়া যায় না যা কথিত নতুন ওহী থেকে অনেক ক্ষেত্রেই পাওয়া যায়। যাদের ইংরেজির জ্ঞান মোটামুটি ভাল তারা উক্ত ওয়েবসাইট থেকে নিজে পড়ে বাছ-বিচার করতে পারেন, আমরা এখানে শুধুমাত্র অবগতির জন্য কিছু লিংক সংযোগ দিলাম।
এই ব্যাপারে আপনার কি মতামত, ইতিবাচক বা নেতিবাচক যায় হোক না কেন, তা আমাদের জানিয়ে বাধিত করবেন। কারন বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। মানব জাতির ইতিহাসে যত নবী-রাসুল এসেছেন তাঁদের সবাইকে তাঁদের সমসাময়িক অধিকাংশ মানুষ ভুল বুঝেছে, হাসি-ঠাট্টা করেছে, অবজ্ঞা করেছে, এমনকি অনেক নবী-রাসুলকে হত্যাও করেছে যা পবিত্র কুরআন পরিস্কারভাবে বলছে।
এ পৃথিবীতে মিথ্যা নবী-রাসুল যেমন এসেছে তেমনি সত্য নবী-রাসুলও এসেছেন। সব বিষয়েই আসলের অস্তিত্বের সাথে ভেজালেরও অস্তিত্ব থাকে! সত্য-মিথ্যা জাচাই করা সব সময় মোটেই সহজ কাজ না। কিন্তু আপনি যদি প্রকৃত সত্য খুজে বেড়ান, তাহলে আপনাকে সত্য-মিথ্যা জাচাই এর এই কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে হবে!
না বুঝে না জেনে খুব সহজে কোন বিষয়কে সত্য বা মিথ্যা বলা বা তার বিরোধিতা করা নিঃসন্দেহে কোন বুদ্ধিমানের কাজ না। যাহোক, আপনার মতামত contact(at)bangla.god-muslims.com ঠিকানায় পাঠিয়ে দিন। ধন্যবাদ
Copyright © https://bangla.god-muslims.com/
One Brilliant Comment - Join Discussion Now!