বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সর্বত্র মৃত্যুদন্ড স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ হওয়া উচিত!
এই দাবী খুবই সাহসী বা দুঃসাহসী বলা যায় বিশেষকরে যখন পবিত্র কুরআন সীমিত ক্ষেত্রে মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছিল ১৫০০ বছর আগে। বহাল রেখেছিল এই জন্য বল্লাম যে, ১৫০০ বছর আগে যখন কুরআন নাজিল হয় তখনকার পরিবেশ পরিস্থিতি আর এখনকার পরিবেশ পরিস্থিতির মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান।
এই আধুনিক যুগে কুরআনের অনেক বিধিনিষেধই স্বাভাবিক কারনে রহিত হয়ে গেছে। দেখুন, যুগ উপযোগী কুরআন বুঝা অতি জরুরী। তাই কুরআনে থাকার মানে এই নই যে তা অবশ্যই দেশের আইনে থাকতে হবে।
এটা সব জ্ঞানী ব্যক্তিই জানে যে ঘৃনা কক্ষন ঘৃনা দুর করতে পারে না। ক্ষমা, উদারতা এবং ভালবাসা ঘৃনা দুর করতে পারে। ক্ষমা, উদারতা ও ভালবাসা শুধু ঘৃনা দুরই করতে পারে না, ঘৃনাকে গভির ভালবাসায়ও রুপান্তর করতে পারে। কি পাওয়ারফুল জিনিস! আমরা ঐ পাওয়ারফুল জিনিস বাদ দিয়ে শুধু প্রতিশোধের পিছনে ছুটি! প্রতিশোধের পিছনে ছুটতে যেয়ে আরো রক্তপাত, আরো ঘৃনা আমরা শেষমেষ অর্জন করি!
অনেকে যুক্তি দেখায় মৃত্যুদন্ড খুন-খারাবী দমনে সাহায্য করে কিন্তু এই যুক্তির চুড়ান্ত কোন ভিত্তি নেই। পৃথিবীর অনেক দেশেই যেখানে মৃত্যুদন্ড নেই সেখানে খুন-খারাবীও কম। আর আমরা কথায় কথায় ফাঁসী দিয়েও খুন-খারাবী কমাতে পারছি না! কারনটা কি?!
যখন আমরা মৃত্যুদন্ড তুলে দিব তখন আচার-আচরনে, ব্যবহারে আমাদের অধিকতর দ্বায়িত্বশীল এবং মার্জিত হতে হবে। ধর্মীয় অন্ধত্য ও গোড়ামী এবং ধর্মীয় উগ্রতা দূর করতে হবে। আমাদেরকে বিনয়ী, ভদ্র এবং পরোপকারী মনোভাব জাগ্রত করতে হবে। আমাদের অর্থনীতিকে আরো ভাল অবস্থায় আনতে হবে।
বহু হত্যাকান্ড ঘটে স্রেফ চরম জেদাজেদী এবং উগ্র মানসীকতার কারনে। মানুষের মধ্যে ক্ষমা, উদারতা, ভালবাসা এবং বদান্যতার মানষিকতা জাগ্রত করার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।
আমরা জীবন দিতে পারি না, সেখানে কি করে আমরা জীবন নিতে পারি?! অনেক সময় ভুল করে নিরাপরাধ মানুষকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে পৃথিবীর অনেক দেশের বিচার ব্যবস্থায়! কি ভয়ংকর এবং জঘন্য ব্যাপার! কল্পনা করা যায়! পৃথিবীর সমস্থ মানুষের সাধনা দিয়েও কি ওসব নিরাপরাধ মৃত্যুদন্ডে দন্ডিতদের জীবন ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব?!
কাজেই নিরাপদ হল মৃত্যুদন্ড স্থায়ীভাবে তুলে দেওয়া এবং আমাদের আচরনকে সংযত এবং সংশোধন করা। ভয়ংকর অপরাধীদের স্থায়ীভাবে আমৃত্য পর্যন্ত জেল দেওয়া যেতে পারে। মানুষ হিসাবে আমরা একজন অতি খারাপ মানুষকে এটাই সর্বচ্চ শাস্তি দিতে পারি।
মহান আল্লাহ হলেন সবচেয়ে দয়ালু এবং মেহেরবান এবং তিনি তাঁর রংগে রঙ্গিন হতে পবিত্র কুরআনে আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। তাঁর রাসুলও ছিলেন ক্ষমার মূর্ত প্রতিক। যুগ পাল্টিয়েছে কাজেই কুরআনের দোহাই দিয়ে মৃত্যুদন্ড বহাল রাখা অযৌক্তিক। ধন্যবাদ।
লেখকঃ লেখক তাঁর নাম-ঠিকানা কিছুই দেন নাই। তাঁর নাম-ঠিকানা চাওয়ায় বললেন তার কোন ক্রেডিটের দরকার নাই। 26.06.2014
Copyright © https://bangla.god-muslims.com
Related
Updated on : Sunday 22nd of May 2022